এখনো মন সহস্র চোখের ন্যায় সাঁতরে বেড়ায় জমাট লাল পাথরের মতো পশ্চিমে ডুবে যায় কেই বা আসে কে বা যায় সন্ধ্যার দিকে সাঁতরাতে নদীটির ওপর দিয়ে ট্রেনের যাত্রা গজরাতে গজরাতে এখনো পতাকা উড্ডীয়মান এখনই মাথার ভিতরে রক্তবর্ণের সজ্ঞান সবাই, নিউরোনগুলি পেঁচিয়ে চিৎকারে খানখান লিফলেটে, ধীরে বাম থেকে বাম আওয়াজে গতিবেগ বাড়িয়ে কমিয়ে এখনো মন চলমান সহস্র চোখের অগ্নিগর্ভ দৃষ্টি শান্তির ধারা জড়িয়ে ধরে যত অনাসৃষ্টি সারারাত ব্যাপী আকাশ কবিতার জঠরে এখনো শিশুর মতো ভালোবেসে, সন্ধ্যাশেষে কে স্টেনসিলে লিখে চলে মহানগরীর প্রতিটি দেয়ালে সহস্র চোখের মণি জ্যামিতির মতো একে অপরকে লেফট লেফট সহস্র নাম জপ করে দিকে দিকে লাল রঙের বিস্ফোরণে ক্রমাগত চোখেরা ঘূর্ণিপাকে আবির রঙের মুখ-উজ্জ্বল ছেলে আর মা এই বিশ্বরূপে প্রত্যেক কবিতা হয়ে ওঠে চিরন্তন ভোর এই অক্ষয় বিশ্বাসে সবুজ আরো সবুজ হয়ে ওঠে সারা রাত জেগে থাকার পর প্রিয় কমরেডের চিঠি , মুষ্ঠিবদ্ধ হাত সিংহের পরাক্রমে বলে, তোরা যতই যা কর, রাত্রি যাপনের পর মাকড়সার লালা থেকে আলোর জমাট সকালে শত কৃষকের মুষ্ঠিবদ্ধ হাত প্রতিরোধ গড়ে তোলে । সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর, ২২-০৯-২০২০
Posts
Showing posts from September, 2020
ইনকিলাব
- Get link
- X
- Other Apps
ইনকিলাব -------------------------------------------------------------------------- এত সব বিস্ময়ের সুর তানে তানে চূর্ণ হয়ে প্রভাতে জানিনা তুমি কেন বাস্পশকটের মতো হাপাতে হাপাতে একরাশ দম নিয়ে ছেড়ে দিয়ে অভ্যর্থনা জানালে আমি তোমাদের ছেড়ে কতদূরে যাবো মহাকালে হয়তো গণিতের চেয়েও অঢেল দূরত্ব বজায় রেখে তোমার আমার ইনকিলাব গাঢ় রঙের আবির মেখে অন্ধকার সমুদ্রতটে থেকে নক্ষত্রের ভস্ম রাঙা আলোকে ঘুরে ফেরা ফসফরাসের মতো- চূর্ণ থেকে আরো চূর্ণের দিকে জিয়নকাঠি দিয়ে ধবল বকের ন্যায় মায়েস্ত্রোর দুর্বিপাকে আরো কতদূর পেরোলে সন্ধ্যামাখা বায়ুর মিহি জ্যোৎস্নার টানে পথিক হয় ঘাসের ঘ্রাণে - যে যত বলুক এই পারাবার নক্ষত্রের জলে ভেজা ক্রন্দনময় চোখ, মিথেন পাথার ফেনিয়ে ফেনিয়ে যত অন্ধকার, যত ক্রান্তিকারী কালপুরুষ তরবারি অসীম অনন্তকাল হতে যত আহত হাত শূন্যে চিৎকারি কবিতার চিরকুট দিয়ে খোঁজ করা দিকশূন্যপুর কমরেডের পুরানো ঠিকানা, হয়তো বা একবালপুর! এখানে এখনো সীমাহীন দ্বন্দ্বে বাড়ি ঘরদোর মহাশূন্যের বেড়া ডিঙিয়ে, আরেক মহাশূন্যতার তরে তোমার আমার চোখ দেখাদেখি বছর কুড়ি পরে জ্যোৎস্নাভরা মেদুরতা আসে যায় জোনাকির থরেথরে এখানে তুমি ই...
বনবাস
- Get link
- X
- Other Apps
বনবাস আমিও একই দোষে দুষ্ট সুহাসিনী শর্করা অধিক সেবন করে ভাবি ব্রহ্মজ্ঞানী পিপিলিকার মতো এই প্রজন্ম গ্রাস করে বুকের স্পন্দন ওঠে নামে উপত্যকার গহ্বভরে তোমার আমার আর নয় বেশি, বড়ো বেশি ক্ষতি ক্ষয় তোমার ত্রিকোণমিতি মেনে তুমি বারবার আসো অচেনা যোগবিয়োগের দৃষ্টান্তস্বরূপ কক্ষপথে ভাসো চেনা বীজ -গণিতের সমাপ্তির নিশ্চয়তা জানি গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরবে বলে তোমার আমার ছেলেরা গেছে বনে সচেতন সজ্ঞানে তবু কারণে অকারণে, আজও ছিন্নভিন্ন নাবিক ওই খালাসিটোলায় বুকের উপর মহাকাল নিয়ে নিদ্রাপথে যায় তখন অনেক কথা বলার থাকে- মহাশূন্যজুড়ে স্টেনসিল দিয়ে লেখা হয় অকুল পাথারে কমল সূর্যের যাত্রাকালে ইথারের ছায়াভরে চিন্তাতীত বসন্তের বজ্রপাত ঘটে যায় আকস্মিকতার তরে তারপর কোনো মুহূর্তে আমিও দোষদুষ্ট সুহাসিনী তোমার আমার ছেলে গেছে বনে, আমি জানি পানপাত্র পরে আছে লিকার ও লেকচার দমবন্ধ কালরাত্রে যদি এগিয়ে আসে নতুন কোনো ফিউচার তারই সন্ধ্যালোকে ক্যারিকেচার গর্ভচ্যুত হলো - অবশেষে বন্দুকের নল তাক করে বহু বেলুন ফাটালো। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ১৯/০৯/২০২০
কমরেড
- Get link
- X
- Other Apps
কমরেড কমরেড এভাবেই কাশতে কাশতে হৃদয় উজাড় করে থাকা সূর্যের গমকে চিলের ডানার মতো যত কাশফুল মেঠোপথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চমকে চমকে লুব্ধক থেকে সমকোণে স্বর্গে নরকে; এভাবেই কাশতে কাশতে যত কাশফুলে মাটির পথ ধরে রাস্তায় সরে সরে আবার সেলাম করে উতলা হয়ে স্বাতীর কেন্দ্রে ঘুরে ঘুরে ঝরে গেলো সীমাহীন নক্ষত্রের জলে যেভাবে তুমি বলেছিলে আবার মাতবে কালপুরুষের মতো সপ্তর্ষির প্রশ্নচিহ্নের তরে আমার বুকের ভেতর কঙ্কালের মতো সেই প্রশ্নের বান ছিল যত উজাড় করা তার পিছু নিয়ে দৌড়েছি তোমার সুরে যতটা কাঁটায় কাঁটায় ঠিক - অথবা প্রতিবিম্ব; শুধু নীলের খেলায় ধুধু করা সবুজ প্রান্তরে তোমার থেকে জাগ্রত ক্রীড়াময় অসীম আমি শুনেছি অগুনতি, অন্তর্লীন শুধু দ্বন্দ্বের অসংখ্য ধ্রুবকে লীলাময় হে কমরেড একপা এগোতে গেলে কতশত দুইপা পিছোতে হয় ! সন্দীপ চক্রবর্তী, শ্রীরামপুর, মহালয়া, ১৭/০৯/২০২০
অতিকায় কমলালেবু
- Get link
- X
- Other Apps
অতিকায় কমলালেবু ১. যে কোনো অতিকায় কবিতায় সারা জীবন উজাড় করা কমলালেবুর ঘ্রানে, বয়েসের সাথে ক্রমানুপাতিক হারে - আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি - তুমি এখনো আমাকে স্মরণ করো কমলালেবুর সাদা তন্তুবাহে যদিও প্রশ্নগুলি অনেক দূরে উত্থাপিত হয় ২. এখানে বাজে করুন সুরে আবার নতুন করে মেনিফেস্টো লেখা হবে রাত্রির প্রহরে প্রহরে তুমি আমি লিখে রাখি কত নিখুঁত শিয়রে শরৎ ফিরে এসেছে সুষুম্না নাড়ীর ভিতরে ৩, এখনো ওলোটপালোট আমি খুঁজতে থাকি ক্যাপিটাল আর যা যা আছে বাকি তোমাকে লেখা চিঠিগুলির আলো বাড়িয়ে কমিয়ে এই হাইড্রা জীবনে আবার দেখা হবে নাকি এসময়ে আমি আরো মুগ্ধ হয়ে শিশুর মতো উষ্ণতায়, ভাবি ব্যারিকেড ডিঙিয়ে গান গেয়ে যাবো যে কোনো অতিকায় কবিতায় সারা জীবন উজাড় করা কমলালেবুর ঘ্রানে। সন্দীপ চক্রবর্তী, শ্রীরামপুর , ১৪-৯-২০২০
এনাটমি ঝনঝন করে
- Get link
- X
- Other Apps
যখন এনাটমি ঝনঝন করে তালা দিয়ে দেয় সেন্ট্রি; দিশাহারা পাখীর দল গরাদের যেটুকু অবশিষ্ট আলো নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে আমিও গা ভাসাই আকাশ থেকে কলসির একেকটা ছিদ্র সেলাই করে বাবুইবাসা আশ্রয় দেয় মহাজগতে - একপা এগিয়ে দুই পা পিছিয়ে ভাবি কারাগারে কোনটা ডান কোনটা বাম হাওয়া উচিত ছিল। আমার হাতে মুঠো করে রাখা ছিল গানপাউডার ঝিরিঝিরি করে পড়ার সময় বুঝতে পারিনি লালঝান্ডায় ফুটো দিয়ে রুপালি চাঁদের কাস্তে ছিন্নমস্তার মতো তরল জ্যোৎস্না কাটতে কাটতে নিজের ঘরে ফিরে গেছে - আমাদের প্রশ্ন ছিল লিন পিয়াও না চৌএনলাই , আমাদের হেসে ফিরিয়ে দিয়েছে ঝিম ধরা আদিম উপত্যকা। যে যতই ধ্যানস্থ হোন আত্মায়, জ্যোৎস্নায় খিলখিল করা হ্লাদিনীর সমীপে প্রাণবায়ু যাতায়াত করে চুপিসারে নিভৃতে। পঞ্চভূতের বস্তুবাদ শূন্য ও অসীমের মধ্যে দোদুল্যমান হয়, দুকূল ছাপিয়ে এই কুলাঙ্গারে কখনো কখনো ভাবি ভাববাদ ও বস্তুবাদ কাটায় কাটায় এক হবে। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর, ১১-০৯-২০২০
আমি যেটুকু পারি
- Get link
- X
- Other Apps
আমি যেটুকু পারি কুড়িয়ে কাচিয়ে পেপারব্যাক এ আগুন জ্বালাই আজকের ছাই মেখে জ্বলে গত দশকের বিরহ বিদায়ে যে যায় রক্ত করবীর গন্ধ মেখে নিয়ে কত দূরে দাঁড়িয়ে আছে গাছ, মাইলস্টোন হয়ে রাস্তার ধারে অগুনতি লাল গাছ ফুলগুলো ঝরিয়ে বোধিদ্রুম আজ ন্যাড়া মাথা, তবুও বাদিক চলে চলে নদীর বুকে রক্তাভ দ্রবণ হাওয়ার উড়ে এলে তারপর শুভ্র বকের চলন নদীর সমান্তরালে যতই না এগিয়ে যাক আকাশ যেখানে নীলে নীলকন্ঠ হয়ে ভাবছে কত সমীকরণ সমাধান হলে জীবনে সঞ্চারপথ ধূমকেতুর মতন পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। সন্দীপ চক্রবর্তী ১০-৯-২০২০ শ্রীরামপুর
কনসার্ট
- Get link
- X
- Other Apps
কনসার্ট ১, তুমি যখন এলে গ্রিলের ভেতরে আমি বোধহয় তুমি ভাবলে এসব যত ন্যাকামি। ২, তুমি ঢেলে দিলে যত সব চিলে তারপর দুইডানা মেলে তুমিও কারারুদ্ধ হলে। ৩, আকাশ থেকে ধূমকেতু তোমায় খুঁজে খুঁজে গ্রীষ্ম থেকে বসন্ত ঋতু চাপা হাসি আর গান হলো মজে হৃদয়ে আর মগজে মগজে পরোয়ানা নিয়ে গ্রেফতার টুকরো টুকরো ব্যর্থ লিপি একত্রিত অন্তহীন ক্লোসিং শাটার ৪, গ্রিলের ভেতরে উল্লাস যায় আর আসে অগম্য সীমারেখা আর দড়ির এই ফাঁসে কনসার্ট হয় কসাই আর ফায়ারিং স্কোয়ার্ডে যারা চলে গেছে লোরকার বিয়ন্ড ওয়ার্ডে পুলিশ যতই হয়েছে যমদূত লেবুর বিস্ফারিত চোখ - বিদায় অদ্ভূৎ যতই মেরেছো তুমি টমিগান দিয়ে খাওয়াপড়া সব ওই একশোবারো নিয়ে। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ০৯-০৯-২০২০
কতদূরে কতঘুরে
- Get link
- X
- Other Apps
১, কতদূরে কতঘুরে রাত কাবার ভবঘুরে মুখ সেলাই ভরদুপুরে খাটিয়া জুড়ে মহাকাশ আগুনে পুড়ে পুড়ে ২. নির্বাপিত কলসী নির্বিকার তুলসী মঞ্চের প্রদীপ সেজেছে রক্ত টিপ্ ছাপ রাখা বেয়োনেট জীবনজুড়ে বধীর সনেট ৩, সমুদ্রে বালির স্তুপে উঁকি মারে জেলিফিশ রূপে তীরের কাছে এরেস্ট হয়ে সমুদ্র তটরেখা পেরিয়ে শালের বনে হেলান দিয়ে হারিয়ে ফেলেছে উন্মত্ত চুল ঢেউ যেভাবে হারায় গর্জনে দুকূল ৪, যেভাবে কবিতা ভাঙা পায় আসে এই বিশাল জলধি পেরিয়ে বালি চুপসে আকাশে নীল তার কতটুকু অংশ পায় কত তারা খসে গেলো দূরবীনের গোড়ায় তুমি এখনো ভাব রাঙা পথের পায় গানের এককলি ছাপ ফেলে গেলো হায় আমিও এখনো ভাবি গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরে ফেলা যায় । সন্দীপ চক্রবর্তী ০৮/০৯/২০২০ Painting: Rene Magritte
কৃষ্ণপক্ষ
- Get link
- X
- Other Apps
কৃষ্ণপক্ষ .......................... .......................... ....................... আকাশে কৃষ্ণতিল চাষ হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নিম্নে গঙ্গা বহতা তারই আশায় এগিয়ে চলেছে এই কৃষ্ণতিল এমিবার মতো একত্রিত আত্মলীন হবে, সমুদ্রগর্ভে। আমি খুঁজি সরোজ দত্তের ছিন্নমস্তার কথা। বহু বিপ্লবী যাদের কৃষ্ণতিল আকাশগঙ্গার চিলের ডানার মতো বিস্তৃত ও বিস্মৃত হয়ে আছে। তবু এগ্রহে কৃষ্ণপক্ষ থাকবে। মানুষ যদিও আত্মবিস্মৃতির দাস, তবু যন্ত্রণার এই লোহিত সাগরে মন্থন করে কালসর্প খুঁজে ফিরি বারোমাস উদ্বৃত্ব লঘুমস্তিস্ক, বসন্তের সন্ধ্যায় গাছ থেকে থেঁতলে হৃদয় আমার শিরা উপশিরায় পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণে ঢাকা পড়ে যায় অজান্তেই গুলিরা পরস্পর একত্রিত, আমার বন্দুক অন্ত্বসত্তা হয়। সন্দীপ চক্রবর্তী কলকাতা ১১-৮-২০১৬
মেঘের মানুষ আর মানুষের মেঘ
- Get link
- X
- Other Apps
মেঘের মানুষ আর মানুষের মেঘ ========================== ============== পারিজায়ী পাখীর ডানা ঝাপ্টে মেঘেরা আমার সিপিয়ার শহরে সবাই কৃষ্ণবর্ণ চাদর মুড়িয়ে চাদরখানাও একাকার মেঘের বসন হয়ে। সারারাত বারিধিজাত এই অন্তরলীন কে আমি ছুটে ছুটে তার দুহাত গলার পাশে রাখি ভালোবাসার দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি, ঠোঁটের ভেজা স্বাদ আমি বাড়ী নিয়ে আসি, ছাদে তার সম্পত্তি অগাধ আমার এই মেঘকন্যারা, মেঘপ্রেমিকারা সকালে যখন বৌবাজার স্ট্রিট ক্রস করে আমার একান্ত হৃদয় কোলে কোলে আগলে নিয়ে যায়, আমি দেখি মেঘেদের কালো, নির্মল রক্তবাহের উপর ট্রামের লাইন চলে গেছে তখনি আমি লাবডাব এর হল্টার থামিয়ে গুলি চালাতে শুরু করি। আকাশের দিকে ঋতুবদলের ঘড়ির কাঁটা মেপে বলি - আবার এসো। এবার আমি কামানে কামানে শহর ঢেকে রাখবো। সন্দীপ চক্রবর্তী কলকাতা ১৬-৮-২০১৬ ( চিত্রসূত্র: মার্ক শাগাল )
দিগন্তরেখা
- Get link
- X
- Other Apps
দিগন্তরেখা ========================== আবার পঁচিশ বছর পরে দেখা দিলো দিগন্তরেখা পৃথিবীর ত্বকে সুঁচের মতন বিধবা স্কাইস্ক্রাপারের ওপরে আবার পঁচিশ বছর পরে দেখা দিলো দিগন্তরেখা যেটুকু সিগারেট জ্বলে পুড়ে হৃদয়ের ভ্রষ্ট খাঁচায় চিলের আকাশটুকু আমাকে বাঁচায় তোমার নীরব হাহাকার এখনো ভাবায় আবার পঁচিশ বছর পরে তুমি কথা বলে গেলে মাথায় ফিনফিনে দিগন্তরেখায়। সন্দীপ চক্রবর্তী কলকাতা ২৪-৮-২০১৬ (চিত্রসূত্র: এম.সি. এশার)
টান
- Get link
- X
- Other Apps
টান ========================== দিগন্তব্যাপী নীল শস্যক্ষেতে মানুষের চাষ হয় নীল চাদর ছিন্ন করে গাণ্ডীব চালায় তার ছিঁড়ে ঘুম ভাঙ্গায় রিক্সাচালকের বক্ররেখায় তার পাঁজরের ঋজুতায় কালাঘামে রাতের ফেননিভ মাখন গড়ায় কমলালেবুর সমসত্ব মানবডাঙ্গায় চীড় খেতে খেতে থেকে যায় নীল ধনুকের ছিলার উপকরণ আর আঁকাবাঁকা নাইট্রোজেনগুলোর অনুরণন। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ০৪-০৯-২০১৬
ভ্রমণ
- Get link
- X
- Other Apps
ভ্রমণ ========================== ========================== ======== তালসারির আনাচকানাচ থেকে সমস্ত ডাউন ট্রেন সমুদ্রতট বরাবর চলে গেছে এখন লোহিতকণিকাপুঞ্জ, সমান্তরালে কাঁপতে কাঁপতে তরল প্রিসমের প্রাণ হাতে বসে আছে আকাশে যে জাহাজডুবি হয়েছে, হয়ত গরল জ্যোৎস্নায় তার কিছু নোঙ্গর ফেলেছে তবু, শৈবালদলে বৃষ্টির যেটুকু পথরেখাময়, সমস্ত ক্যানভাস প্রদক্ষিণ করে বৈকালে ডুবে যেতে হয় পৃথিবীর তিন ভাগ জল, তাই অগ্নিও খোলসাবৃত হয়ে দংশনকারী সাপের মত সমুদ্রেই নীল, ভাবনাময়। সন্দীপ চক্রবর্তী কসবা, কলকাতা ১৩-৯-২০১৬ (চিত্রসূত্র: মার্ক শাগাল, দ্য ড্রাঙ্কার্ড)
তালা, চাবি এবং বিদগ্ধ কলকব্জা সম্পর্কিত
- Get link
- X
- Other Apps
[১] এখনো বন্দুকের বেয়োনেট আকাশে উঁচিয়ে শালবনসেনা মহারথীর মত একত্র দাঁড়িয়ে আছে। গভীর শ্রদ্ধার্ঘ্যে, মচমচ পাতা ঝরিয়ে ডায়রির ভাঁজে বোটানির কবরে ঠাঁই নিয়ে আলোছায়াপথে চড়ুইভাতিরা স্থান পায় শতরঞ্চি বিছিয়ে বিবস্ত্র চড়ুইপাখী আহার সারে গাত্রের দাহ ইনিয়ে বিনিয়ে। [২] এখনো অমলডাঙায় জোনাকির ধাপে ধাপে নামা যায় পরিখার নির্জলা খাঁটি চরে। সেখানে চাঁদের আলো ছেড়া মশারীর নেটের মত আটকে থাকে বুড়ীর পরিত্যক্ত চামড়া ছায়ারা এগিয়ে পিছিয়ে এলে অন্ধকারের কিবা এসে চলে যায়। [৩] চোখের আলোয় দেখি সূচীসূক্ষ নৌকোরা বুকফাটা নদী সেলাই করে তীরবর্তী তখন হাজার হাজার আহত মাছ জীবনের ভর ও ভারে অপেক্ষমান। নদীর হৃৎপিণ্ড ধকধক করে মোহনার রন্ধ্রজুড়ে নক্ষত্রের তাঁতি তাঁত বোনে পান্ডুর অতিকায় পাকস্থলীর ভাগাড়ে ভাগাড়ে। সন্দীপ চক্রবর্তী কসবা, কলকাতা ০৯-১২-২০১৬ (চিত্রসূত্র: বন্ধু এবং অগ্রজ শ্রী অমল সান্যাল)
পাঠ
- Get link
- X
- Other Apps
পাঠ ======================= আপেলভ্রষ্ট গাছতলায় পৃথিবী পাঠ পড়ায় সামুদ্রিক লঘিষ্ট গরিষ্ঠ কণিকায় পৃথিবী পাঠ পড়ায় প্রবাসী গ্লাভস কররেখায় পৃথিবী পাঠ পড়ায় আমার চিনতে না পারার মনিকোঠায় পায়রা এখনো ওড়ায় শুধু ভাতের ফেনায় রাত্রি হয় সমুদ্র আকাশচুম্বী, রেখাময় গর্জনে নিজেকে রেখে মিলিয়ে যায় পৃথিবী পাঠ পড়ায় দালালদের পাঠ কবে সম্পূর্ণ হবে? সন্দীপ চক্রবর্তী কসবা,কলকাতা ১-৯-২০১৬ চিত্রসূত্র: এম. সি এশার
বহুদূর তর্কের কাব্য
- Get link
- X
- Other Apps
বহুদূর তর্কের কাব্য ========================== ============ আকাশের গোলোকধামে শহীদ মিনার প্রবেশ করেছে অবাধ হয়তো উড্ডীন কৃষ্ণকলি ভেবে- ফুটবল জালে ধরা প্রতিবাদ আর চকচকে মাছের স্তুপ, অদৃশ্য কৃষ্ণগহ্বর যেভাবে দুহাতে ঢালে নাগরদোলা গোল গোল ঘুরে যায় নিউক্লিওলাসের যুগপত চালে সন্নিকর্ষে দিন যায় আকাশপারে, রাত্রি নামে আপেলের নষ্ট টানে ট্রাম এগোয় কেন্নোর গতিরেখায়, মন গড়ায় কেবলি ভাটার পানে। সন্দীপ চক্রবর্তী কসবা, কলকাতা ০৮-০৯-২০১৬ (চিত্রসূত্র: এশার)
প্রণতিকে একবার প্রশ্ন করি
- Get link
- X
- Other Apps
প্রণতিকে একবার প্রশ্ন করি ========================== ====== আবার সমান্তরাল আষাঢ়ের ফ্ল্যাট ভরে গভীর বাণী এলো নাকি! মৌসুমীর উদ্বেল চাউনি ঝরে লোকোমোটিভের স্পিড ক্রমশঃ ঘড়ির কাঁটার মত বাড়ে ছাউনিরূপী পলিথিন, জনগণমন ছাতায় ভর্তি শহরে ফর্ম ফিলিংয়ের লাইন, মর্গের আয়তক্ষেত্র চেম্বারে স্টেশনে দম নেয় ট্রেন, বিস্ফারিত সবুজ প্রান্তরে জীবনের হাপর আর টানবে কতদূর? প্রণতিকে প্রশ্ন করে। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ১০-৯-২০১৬ (চিত্রসূত্র: ভ্যান গঘ)
করোটির কবিতা
- Get link
- X
- Other Apps
করোটির কবিতা -------------------------- -------------------------- ---------------------- জানালার গর্ভে ক্ষয়িষ্ণু আকাশ, ঘোরাফেরা ফাঁকা তো লাগবেই, চাঁদের ফালাফালা বাতাস তদুপরি তরল হয়ে গেলে জ্যোৎস্নাও শান্ত অগ্নি এক্ষেত্রে পাঠককে সৌন্দর্য্যের একধাপ ওপরে সেতারের তারগুলোর রিনিঠিনি শ্রবণের অভ্যাস প্রয়োজন গঙ্গাবক্ষে কৌমার্য্য কৃষ্ণচূড়ার মতো ঝরে মৃত শহীদদের বাজানো সেতার তিনভাগে ভাগ করা যেতে পারে, নিশ্চিহ্ন হবার সময়: ১. লম্বচ্ছেদ, ২. প্রস্থচ্ছেদ, ৩. তড়িৎচ্ছেদ পাঠক, এত টিপটিপ করে ঝরলাম কারন, সময়ের ত্রিশূল: আপনি, আমি কেউই হজম করতে পারিনি তদুপরি আমি চতুর্ভূজা, রক্তজবার মত জিহ্বা, মুণ্ডপরিহিতা এবং পদতলে স্থান, কাল ও পাত্র, ব্রহ্মের এই অগণন ডিমের বিন্যাস নক্ষত্রময় যে হাসতে হাসতে জরায়ুতে গ্রহন ও বর্জন করে সন্ধ্যারতির মত উঁকি মারে করোটির কবিতা। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ২৫-৯-২০১৬ (চিত্রসূত্র: রেমব্রাঁ, দ্য মিল)
কবিতার ডিম
- Get link
- X
- Other Apps
কবিতার ডিম -------------------------- -------------------------- ------------- [১] মহাকাশে ছুটে চলা আলো চাঁদের কাছে ঘাড় ঘুরিয়ে এসে চুমু খেলো ঘড়ির টিকটিক বোঝে সময়ের প্লবতা বান আসে চোখের জোয়ারে এত সরলরেখা গোধূলীর জালে আঁকা তবু এত সুনীল বক্রতা রেখে যাও ঈগলের সঞ্চারপথে। [২] আমরা সবাই পথভ্রষ্ট আপেলের বীজ তাই হাত ছেড়ে যেতে গিয়েও পিছন ফিরে ছায়ার চলন ও গমন দেখি চোখের কোনায় জানি, জলের মতো একসময় বিন্দুর মত ভাস্কর হয়ে যাবে। [৩] লোহার বলের মত গড়িয়ে দেওয়া ট্রাম স্নায়ু কামড়ে ঠোঁটে ঠোঁট ঘষে চলে তুমি রাগ করে ঘন্টা বাজিয়ে নামনি এই অপারগ স্নায়ুপথে আপনমনে হাটছিলে কোনার সীটে বসে তখন আমার রিগর মর্টিস হলো। [৪] তুমি বক্ষপিঞ্জর থেকে গেছো সরে হয়তো কোনো ফড়িঙের নীলডাঙ্গা অন্তরে আমিও রাতপাখীর কোটরের বাইরে পরিভ্রমণরত খালাসিটোলার খুঁজে হাঁতড়ে হাঁতড়ে আকাশকে টেবিলে শুইয়ে ফোরসেপ করি নোঙ্গরে নোঙ্গরে। সন্দীপ চক্ৰৱৰ্তী শ্রীরামপুর ২৬-৯-২০১৬ (চিত্রসূত্র: লেসন, ওয়াসিলি ক্যানডিনস্কি)
ফ্রিকোয়েন্সি
- Get link
- X
- Other Apps
ফ্রিকোয়েন্সি -------------------------- -------------------------- ---------------------- সাগরময় উদ্বেলতা, বালিরাশি আর স্বর্ণাভ বিকিরণ কলসিতে ঢেলে উদ্বৃত্ত ঝিনুকের মত হাওয়ার পরিধীতে বসে আছি লাটাইয়ের মত ঝাউতলে ঝাউগাছ নিকটবর্তী বেলাভূমির কাছে, স্থুলকোনে গভীরে আছে বালুতট ঢালরূপী আর সমুদ্রকে তরোয়াল ভাবলে, এরা পরস্পরকে করাতের ফেনার মত কাটে, নোনা জলে টুকরো টুকরো করে তাৎক্ষণিক বিরতি নিয়ে কলসে ফিরে যায় ঝাউসারী উদাত্ত কণ্ঠে ব্যাপ্ত থাকে নৃত্যরূপী বায়বীয় কিনারায় ভেবে যাই কর্ণপটহ থেকে প্রকৃত গর্জন অন্তঃপুরে কবে পৌঁছায়! সন্দীপ চক্রবর্তী কসবা, কলকাতা ২৮-৯-২০১৬
গ্রামার
- Get link
- X
- Other Apps
গ্রামার -------------------------- -------------------------- ----------------- সমুদ্রের গভীর থেকে আকাশের স্বরলিপি বেয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সমর্পিত - স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ বেদনার পরিভাষা নিয়ে সুনীল জলধি পিছিয়ে এগিয়ে এসে ভ্রমরের কোটরের আস্তানায়, বর্ণের গ্রাসাচ্ছাদন উচ্ছিষ্ট অববাহিকায় পথ সোনালী আলো খুঁজে নেয় আকাশ চলে গেছে রবিশস্যের হাসি নিয়ে, আমাদের নক্ষত্রে দোলা দিয়ে পঁচিশ বছর আগে তোমার স্বরলিপি আঁকা চৌকাঠ পেরিয়ে, মিথেন শহর আনেক ছাড়িয়ে, পারসিক গালিচা যাত্রাপথে গেছে ক্ষয়ে সেইসব গাঢ়, কমলা রং তুমি ফিরে পাবে চিলের বাসরঘরে খোঁজ নিয়ে? সন্দীপ চক্রবর্তী কলকাতা, কসবা ২৮-৯-২০১৬ (চিত্রসূত্র: "গোলকোন্ডা", রেনে ম্যাগ্রিত্তে)
বুদ্ধিরূপেণ সংস্থিতাঃ
- Get link
- X
- Other Apps
বুদ্ধিরূপেণ সংস্থিতাঃ -------------------------- -------------------------- ------------------ [১] দেখেছি তার কঙ্কালসার পারিজাত উড়ানে শুনেছি সিম্ফনি তার পাঁজরাবৃত বক্ষে গলেছে লাভা মুহূর্তজুড়ে পাকস্থলীর প্রতি কক্ষে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ঘরে ঘরে কাশের আগমনে। [২] দেখেছি লৌহসম্রাজ্যের ওপর ঘাসেরা গজিয়েছে তবু ঘাসের ডগাগুলো বেয়োনেটের মতো সূচ্যগ্র আমার তিমির বক্ষস্থলে মুচড়ে যারা জ্যোৎস্নার আলোয় কামিয়েছে আমার প্রেতিনী ঘাসেরা তাদের ধমনীর সুরেতালে সঙ্গম গাইতে ব্যগ্র। [৩] দেখেছি যাদের শিয়রে থ্যাবড়া পাথরবালিশ দেখেছি যাদের জীবিকা কচুরী মহিষপালিশ দেখেছি কারা ম্যানহোল, ডোমপট্টিতে থাকে আঁধারে শুনেছি কতজন জীবনানন্দকে ডাকে। [৪] মুখোশগুলি আলোকবরষে ধায় লোহিত রজনী ক্রমশঃ নীল হয় তোমার আমার ব্যবধানে ভোর হয় আগমনী গান শ্লথ হয় মোহনায় নিশিভোরে ফুটপাতে ট্রামে মহালয়ায়। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ০২-১০-২০১৬ (চিত্রশিল্পী: ইগোর মোরস্কি)
অভিব্যক্তি
- Get link
- X
- Other Apps
অভিব্যক্তি -------------------------- ------------------ গামছার মতন কাচা শরীর নিংড়ে দড়িতে টানটান ঝুলে আছে আমাদের চুমুর আতশবাজি যা ট্রেনের সাথে সমান্তরাল গতিপথে ছুটতো, আজ এক জাহাজের ভুলে ছিদ্রপথগুলি দিয়ে গভীরে ডুবেছে। মনে হয়, সমুদ্রতটে শুধু গর্জন বিক্ষিপ্তহারে ওঠানামা করছে। সিক্ত ঠোঁটের বিলীন শান্তির জীবন মাইলব্যাপী সিলিকা সম্বল করে গার্হস্থ্য মেঝের মতো ধুয়েমুছে সাফ করে যাচ্ছে নিত্যদিন। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ০২-১০-২০১৬ (চিত্রসূত্র: সালভাদোর দালি)
কৃষ্ণকলি, কোন জ্যামিতিতে আমি তাঁরে কালো বলি?
- Get link
- X
- Other Apps
[১] রাখাল রাখা আছে মৃত জ্যামিতিক প্রান্তরে। গভীর গাভীর করোটি থেকে অনর্গল পিঁপড়ে। স্রোতের একের পর এক মিনারে, দৃষ্টি অবশিষ্ট মাংসালো জাগতিক উপাদানের। জ্যামিতির ব্যাসার্ধগুলি ছেদ করে সার্চলাইটের ট্রাজেক্টরি ঘুড়ির সুতোর মত কাটাকুটি খেলা, গুনগুন করে ভ্রমরে ভ্রমরে। [২] পাগলা সাইকেল চালায় আর আছে ডাব। গ্রহপুঞ্জের মত থোকা আঙ্গুর যেমন। ব্রহ্মাণ্ডও সংগঠিত জরায়ু। এখানে মিছিল চলে রেসালট্যান্ট ভেক্টর ফোর্সএ, অর্থাৎ সর্বসম্মতিক্রমে। যেমন অগ্নিকণিকারা পরস্পরের সহযোগিতায় নৃত্যনাট্য করে। [৩] অগ্নিময়তাই দৃশ্যময়। বস্তূবাদ ও ভাববাদকেও নিজেদের প্রোজ্জ্বল রাখতে হয়। কোনো নিরলস কারনে প্রাগৈতিহাসিক ডিমের খোলস কচ্ছপের রাজনীতি শেখেনি। একলব্যের মত রাখাল রাখা আছে মৃত জ্যামিতিক প্রান্তরে। জ্যামিতিতে সে তার বুড়ো আঙ্গুল জুড়ুক। আমার প্রার্থনা। [৪] অগ্নিদগ্ধ পাঠক। আপনারা প্রায় সকলেই কৃষ্ণকলি হয়েছেন। তাই আমার একান্ত আশা: একলব্যকেও বুঝবেন। ও দ্রোণাচার্য্য তথা মহাভারত আর একবার পড়বেন। তারপর যত খুশি গীতবিতান পড়ুন ও বোঝান। সন্দীপ চক্রবর্তী কসবা, কলকাতা ৪-১০-২০১৬
বস্তুর অবস্থাবিশেষ
- Get link
- X
- Other Apps
বস্তুর অবস্থাবিশেষ -------------------------- -------------------------- ---- [১] ম্লান ভোরকে করপুটে গঙ্গাকে খাইয়ে এসে বিছানা, শতাব্দীপ্রাচীন চিঠির সমাধি হয়ে আছে যে মানুষটা জীবিতদের পঙ্কে জাত করুণারূপী টলটল করছে। অথবা মৃতদের তুলোর জগতে ইতস্তত ঘোরাফেরা করছে। নক্ষত্রের ম্লান তুলাবশেষ ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ ভূস করে আতশবাজি হয় যেমন। [২] আট বছর বাদে ওষুধের ভুলে যাওয়া স্ট্রিপের মত একটি বড়ি কঙ্কালের মত ঝুরঝুর করে পতনোম্মুখ হলো ধুলোগুলি একত্রিত করে আমি চিঠিটি জোড়ার চেষ্টা করলাম কাগজ ব্যতিরেকে মাথার ভেতরে অসংখ্য শব্দের ম্লান মেঘ জমলো। [৩] সিপিয়ার দ্রবণে বাষ্পদের দিকে তাকিয়ে আছি অত্যাধিক চাপে বায়ু তরল হয়, ইমোশনের ভার চোখও চাপতে পারেনা, মূত্রত্যাগ করে ফেলে ম্লান আলো এলো গ্রিলে ক্রাচ রেখে কমলালেবু নিংড়ে। সন্দীপ চক্রবর্তী কসবা, কলকাতা ১৩-১০-২০১৬ (চিত্রসূত্র: রেনে ম্যাগ্রিত্তে, "আয়না")
- Get link
- X
- Other Apps
বসন্তের কামড় -------------------------- ------------------ [১] এখনো গায় লেগে বসন্তকামড়ের দাগ কানে ঝরে আছে উড়ন্ত পাতার হুইসেল শরতের বনে উঁকিঝুঁকি মারা নলের দুচোখ কঠোর, রঙ্গীন ব্যাগে রাখা ক্রুসিফায়েবেল [২] ট্রামের পেছনে পেছনে রক্তের স্রোত ছোটে বস্তাপচা আলুর দেহাবশেষ সুরক্ষিত হিমঘরে কে যেন চাঁপাসৌরভে চাঁদের বুড়ি থেকে ওঠে চরকা ঘোড়ায় মাছ এঁকেবেঁকে সমুদ্রস্থিত অধরে [৩] এমন দিনে হাতে নেই কোনো ভবিতব্য তোমার হাতেও নেই কোনো রেফারেন্স মাও আজ শুধু টুপি পরা নব্য মহাকাব্য হারামীরা শুধু চুষে গেছে তব টলারেন্স। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ২০-১০-২০১৬ (চিত্রসূত্র: সুঝৌ ওয়াটারকালার, অজানা চিত্রকার)
তাসের দেশ ও দেশের তাস
- Get link
- X
- Other Apps
তাসের দেশ ও দেশের তাস -------------------------- -------------------------- ----- [১] সারারাত স্বপ্নের তাসগুলোকে সাজিয়েছি তাদের স্বদেশে। সেখানে উদ্যান জলপান করছিলো সবুজ হয়ে ঝুঁকে পড়ে। সেখানে পাকস্থলীর টিউবগুলি স্নেহস্পর্শে গাছের ও মানুষের রক্তবাহগুলির পরিচর্যা করেছে। সূর্য উঠেছে মেরুদন্ড বেয়ে, অজস্র চাঁদ উঠেছিল অসংখ্য চোখের তারার ঝুড়িতে। [২] সারারাত দুঃস্বপ্নের তাসগুলোকে জ্যামিতি মেনে ক্যাসেলে জুড়তে চেয়েছি, ভুলে গেছি ক্যাসেলের ভেতর থেকে শুধু বায়বীয় বুদ্বুদ আকাশের অক্সিজেন হয়ে পরীরূপী উড়ে যায়। কৃষ্ণকায় এক অতিকায় চিল ডানায় মুড়ে শুয়ে থাকে সারিবদ্ধ কাফনরাশি জুড়ে। ভোরের কম্বলে দৃশ্যমান শুধু অনালোকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শেষ নিঃশ্বাসের ছত্রাক। [৩] দারুচিনি চিবানোয় আমার নাই অভিলাষ হাওয়াইয়ান চপ্পল ও হাওয়ার সাথে পরবাস নাই আমার। পেরেক ফুটলে ল্যাংড়াই অমনিবাস নিজের মতো করে গজকে এগিয়ে শুনি সুরোচ্ছ্বাস মানিনা আকাশের লালফিতের ফাঁস। মানিনা দেবতার ধেয়ে আসা গোগ্রাস। মানি শুধু চোখের দূরবীনজুড়ে জীবনেতর প্রয়াস। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ২৬-১১-২০১৬ (চিত্রসূত্র: পল ক্লী)
বেশিদূরে আমি ধাই না
- Get link
- X
- Other Apps
বেশিদূরে আমি ধাই না -------------------------- -------------------------- -------------------------- - [১] গ্রহনক্ষত্রপুঞ্জ ইথারে ডুব দিলে জেগে থাকে মহাকাশ। মানুষও ঘূর্ণমান মশারিব্যাপ্ত বটগাছ জুড়ে। পাকস্থলীর শিকড়, আগ্রাসী খাল, বিল, নদীনালা আর মিথেনের অরূপশহরে। [২] জানিনা তড়িৎচুম্বকীয় অনুভব কেন এত আকর্ষণ করে যে মৎস্য পরাজয়ে ডিম্বাণু ছেড়ে চলে গেছে জরায়ুর তন্দ্রালোকে, তার ভূতপূর্ব ছটফটানি আমায় বলে জানি জানি মাংসাতুর লালা ঝরিয়ে কোনোদিন কসাইখানায় যাওনি? তবু আমার এই বুদ্ধিহানি - ভেবে হয়তো ওরা ত্রিভুজের নাম রেখেছে স্বর্গরথ। [৩] গম্ভীর নদীর গাত্রপ্রবাহে খিলখিল করে যায় অগুনতি ওষ্ঠের হাসি। সেই হাসি অট্ট, দুর্বিপাকে পড়া আকাশে, তখন রেসের ময়দান করতালিতে ফেটে পড়ছে। ফেটে কি পড়ছে? পোড়াকাঠ কি ফাটছে? মাঝি জানে। যে নদীময় প্রদক্ষিণরত। ডোম জানে, চুল্লুপানেও বসন্তের মত জাগ্রত। ঝরাদেহের প্রহরী। ঝরে পড়া নদীনালা, তরঙ্গের উৎখাত লহরী। [৪] বেচারা সময়! রক্তবাহের অন্ধ গলিপথে পাকস্থলী থেকে পৌঁছেছে হৃদয় চাষা প্রাণপণ চষে যায় শেষের কবিতা। নিদেনপক্ষে লাবন্যঅন্ধকারে বনলতা। আঁচড় কাটে শুঁড়িখানার শেষ পদযাত্রী। চোখে তা...
এত্ত সহজে যাইতে দিমু ক্যান?
- Get link
- X
- Other Apps
এত্ত সহজে যাইতে দিমু ক্যান? -------------------------- -------------------------- -------------------------- - শীতশুস্কতায় মনে ময়নাগুড়ি ঝরেনা সহযাত্রিণী আমায় বলে কোথায় থাকেন, কোথায় যাবেন আমার চোখের খালবিলে জল আসে সাথে ব্লটিং পেপার রাখি কালির এরকম দাগ জানালা থেকে মুছে গেছে আমি কর্নিয়ায় ডিজাইন করি কয়েন টস করে বলে দি মহাধূর্ত চোখ, কাঁটাতার ধরে উদগ্রীব চোখ, থুতু দিয়ে নোটের হিসাব রাখা চোখ, বেনীর পাশে ঘুরঘুটিয়া চোখ, নদীতে ডুব দিয়ে মাছের সাথে কথা বলে মর্গে বাক্সবন্দী হয়ে কবিতা আউড়ে যাওয়া চোখ ..... আমার অন্তঃস্থল এক বন্ধ্যা নদীর ডাঙা হেঁচড়েপেছড়ে কুমীরের মতো উঠে এসেছি গায় জড়িয়ে রাত্রির খসে পড়া চামড়া ক্রোধে আমি বাইবেল ছেড়ে আকাশের উদ্দেশ্যে কামড় বসিয়ে নিজের দাঁতগুলোকে খটখট করে সার্চ করেছি ওয়ারেন্ট ছিলোনা তাই কেউ গ্রাহ্য না করে মূত্রলোকের অবতারেরা আমার পৃষ্ঠদেশে কাটাকুটি খেলেছে। আমি আকাশের চামড়াসমেত তাদের পা কামড়ে রেখেছি মাংসগুলোকে যেতেই দিতে পারতাম কিন্তু শক্তিলোভনীয়পদ যেতে কেন দেব? সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ১৭-১২-২০১৬ (চিত্রসূত্র: সালভাদোর দালি)
আলোরা যৎসামান্য
- Get link
- X
- Other Apps
[১] আলোরা যৎসামান্য পিড়িং করে গেলে ধূসরতা নয়, মাছের নির্লোভ চোখের জলে দেখেছি আলকাতরার স্রোত--- চোখের হাড়মজ্জা হাতে নিয়েছি চ্যাটচ্যাটে পীচের অন্ধকার বল, নক্ষত্রখসা ছাইয়ের ভেতরে যেটুকু রস থাকে থাকলো আপেলের অংকুরোদ্গমের সময় ধূসরতা আর তাই সমাপ্তির পর্বে চোরে চোরে মাসতুতো ভাই। [২] শ্যাওলার থেকে কতিপয় সঞ্চয় শুঁড়ে নিয়ে যায় কাফনে ওড়ায় যাত্রাবার্তায় এক মথ ভঙ্গুর সময় আছে পড়ে অভাগা পথ রাস্তার গ্লানিও এদিন ক্ষয়ে যায় মূর্খ রথী অশ্বের বিপরীতে ছোটায় ক্ষমতার খ্যাড়খ্যাড়ে রথ। [৩] কর্নিয়ার শাখজুড়ে বজ্র নামে নিনাদপুরে স্নায়ুতন্তুবাহগুলি রিবনের মতো জড়ায় পোড়া জঠরে নিশানার গন্ধ পেয়ে দলছুট হরিণ কবি গান ধরে খুনের সময় এসেছে বনের নান্দনিক শাখাশিকড়ে বাআআআআজে করুণওঁওঁওঁওঁ সুরেএএএএএএ.... সন্দীপ চক্রবর্তী কসবা, কলকাতা ৩০-১২-২০১৬ (চিত্রসূত্র: সালভাদোর দালি, এটোমিকাস)
Right to information
- Get link
- X
- Other Apps
রাইট টু ইনফরমেশন -------------------------- ----------------------- আমি এটুকু জানতে চাই, কৃষ্ণ উপত্যকার জংঘায় শহীদ সূর্যাস্ত হলে রাত্রির পাঁপড়ি সমেত মালাগুলি শহীদবেদীতে কে পড়ায়? আমি জানতে চাই কৃষ্ণচূড়া ঝাঁকিয়ে রক্তাক্ত বুকের উপর শহর অপেরেশনের দিনে কে কৃষ্ণের হাত বুলিয়ে দেয়? আমি এও জানতে চাই শৃঙ্খলার করিডোর ছাড়িয়ে রেখে আসা হাত-পা-রেটিনার স্তূপগাড়ি ম্যানহোলের শাখায় শাখায় কারা ঢেলে সীল করে যায় আমি নির্বীজকরণ অবধি দেখে যেতে চাই কবিতার গ্রাম দিয়ে কত পেষা যায় শহুরে দুটি টেনিস বলের গোলরেখা ছায়ার ইলিশভ্যাপ্স আর কবরের স্নাক্স আমার নাম সন্দীপ, জমালয়ের দরজায় দেখতে চাই কাটা মাথা কত দামে বিক্রি হয়। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ২৪-১২-২০১৬ (চিত্রসূত্র: সালভাদোর দালি, "ডন, নূন, সানসেট এন্ড ডাস্ক")
কবি ফাল্গুনী রায় স্মরণে
- Get link
- X
- Other Apps
কবি ফাল্গুনী রায় স্মরণে -------------------------- -------------------------- ----- এইখানে, সারারাত আকাশের ছাই খসে পড়ে দুর্বাদলে শুলে স্প্রিঙের মতো পেঁচিয়ে ধরে বক্ষপিঞ্জর, তার নীচে দর্জির সুতোর মতো কিছু শনাক্তকরণীয় বৈশিষ্ট তার পাশে উল্কা হতে চাওয়া একটি বিজ্ঞাপনের হৃদয় যা কুকুরের মতো গোঙাতে গোঙাতে ধাক্কা মেরে চলেছে। চলেছে .... চলেছে .... এইখানে, বানের জলের মতো চিন্তারা সমুদ্রে অন্তর্নিহিত হবার পর কবিরা একে একে ঝাঁপ দেয় কাদায় একটু একটু করে আত্মহত্যা করে সারারাত আকাশের ছাই হয়ে ঝরে। ঠিক এইখানে, মাটির তলায় সুড়ঙ্গ খুঁড়ে শহরে চাষ করতো মানুষকে, তার চামড়াকেও দগদগে লাল করে তুলতো এখনো শ্মশানে লিখে জ্বলজ্বল সরোজ দত্ত। এখানে, নীড়ে ফেরা পাখীর ডিমে তা দেবে বলে লাশকাটা ড্রয়ারে শুয়ে এখনো মদ খাচ্ছে ফাল্গুনী রায়। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর ৩১-১২-২০১৭ (চিত্রসূত্র: ফাল্গুনী রায়, স্কেচ বাই সম্বিৎ বসাক)
নৈশঅভিযানের পিঁচুটি
- Get link
- X
- Other Apps
নৈশঅভিযানের পিঁচুটি চোখ থেকে মুছে ফেলি অকাতরে লিখে রাখা প্লাস্টিক কবিতা! আপাদমস্তক প্লাস্টারে ঢাকা কাকস্য পরিবেদনায়ও কবি যে কুকুর রাতে চিল্লায়, যে মানুষ স্বপ্ন দেখে পায়চারি করে তাদের কাটা জিভগুলি ঝোলানো আছে সীমান্তের কাঁটাতারে তাই আমি বলতে পারিনা ঝরা পালক বরফের টুকরো কিনা আমি বুঝতে পারিনা কুকুর দুধের স্বাদ মদে পেয়ে - উত্তর থেকে দক্ষিণ গোলার্ধ অবধি লেজ নেড়ে যায় কিনা আমি বিশ্বাস করি " রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে " এলো পেট্রোলিয়ামজাত ধবল বক, বুকে কয়েদির ব্যাজ পরে, আকাশে জেলী ছড়িয়ে আমি ভাবি প্লাস্টিক সার্জারি করা সভ্যতার চামড়া ছাড়ানো হবে কী করে আমি ভাবি দেখি মহাকাশ থেকে সুতোয় ঝুলছে প্লাস্টিক নভোচারী আমি ভাবি ঠাকুরঘরে বর্জ্য প্লাস্টিক পোঁড়া ধুনো জ্বলছে নিশিদিন ভরসা রেখে। সন্দীপ চক্রবর্তী শ্রীরামপুর, ০৫-০১-২০১৭ (চিত্রসূত্র: সালভাদোর দালি)